বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:বেড়েই চলেছে কোভিড–১৯ সংক্রমণ। প্রায় প্রতিদিনই পুরনো রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে সংক্রমিতের সংখ্যা। সোমবার শেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৬২৪ জন। এর আগে এতজন করোনা সংক্রমিত হননি রাজ্যে। ফলে বাংলায় মোট সংক্রমিতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৭ হাজার ৯০৭ জনে। তবে এখনও কোভিড–১৯ ভাইরাস সক্রিয় রয়েছে ৫ হাজার ৫৩৫ জনের শরীরে। এদিন রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন থেকে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
সারা বাংলায় একদিনে যতজন সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই কলকাতার। শেষ ২৪ ঘণ্টায় মহানগরীতে সংক্রমিত হয়েছেন ১৮০ জন। এ ছাড়া শেষ ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ২৪ পরগনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১২১ জন, হাওড়ায় ৯৫ জন এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৭৬ জন। পাশাপাশি এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরে ৬ জন, পূর্ব মেদিনীপুরে ৫ জন, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৫ জন এবং বাঁকুড়ায় একজন সংক্রমিতের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। উত্তর বাংলার অবস্থাও কম–বেশি একই রকম। দার্জিলিং এবং মালদায় করোনা সংক্রমণের প্রকোপ বেশি। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দার্জিলিংয়ে ৩০ জন এবং মালদায় সংক্রমিত হয়েছেন ২৮ জন। এ ছাড়া জলপাইগুড়িতে ১৩ জন, কোচবিহারে ৫ জন এবং উত্তর দিনাজপুরে ৪ জন এদিন সংক্রমিত হয়েছেন।
তবে সুস্থ হওয়ার হার যথেষ্ট বেশি হওয়ায় এখনও হতাশ নন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫২৪ জন। যাঁরা সুস্থ হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কলকাতার ৩৩৯ জন রয়েছেন। রাজ্যে করোনা–মুক্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৭১৯ জন। আর এই ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জন। এর ফলে করোনা সংক্রমিত হয়ে মোট মৃতের সংখ্যা হয়েছে ৬৫৩ জন। এদিন রাজ্যে যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৬ জনই কলকাতার। আর হাওড়ার ৩ জনও এদিন মারা যান। এ ছাড়া করোনা সংক্রমিত হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের।
এদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যে কোভিড ওয়ারিয়র ক্লাব খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পথ চলা শুরু হবে বহরমপুর থেকে। সেখানে থাকবেন ৬০ জন সদস্য। শুধু বহরমপুর নয়, পরে প্রতিটি জেলাতেই এই ক্লাব খোলা হবে বলে সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা সংক্রমিত হয়েও লড়াই করে যাঁরা এই ভাইরাস থেকে মুক্ত হয়েছেন, তাঁরাই এই ক্লাবের সদস্য হবেন। যাঁরা করোনা সংক্রমিত, তাঁদের উৎসাহ দেওয়ার কাজ করবেন তাঁরা। এই করোনা–জয়ীদের একটি মাসিক ভাতাও দেবে সরকার। একই সঙ্গে করোনা–যোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ জুলাই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বাংলার নবরূপকার হিসেবে কথিত ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মদিন ‘ডক্টর্স ডে’তে ছুটি ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও এই দিনটিকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করার আবেদন জানান।